প্রোস্টেট ক্যান্সারঃ হোমিওপ্যাথি একটি কার্যকর চিকিৎসা পদ্ধতি
সূচিপত্র:
প্রষ্টেট হচ্ছে প্রজনন ব্যবস্থায় উপস্থিত গ্রন্থি অঙ্গ যা সিমেন এর মত তরল উৎপন্ন করে এবং যা শুক্রাণুকে রক্ষা করে এবং পরিবহন করে। প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে, এটি আখরোটের আকারের হয়, এবং গড় ওজন প্রায় ১১ গ্রাম, সাধারণত ৭ থেকে ১৬ গ্রামের মধ্যে। প্রস্টেট পেলভিসে অবস্থিত। এটি মূত্রথলির নীচে বসে এবং মূত্রনালীকে ঘিরে থাকে। প্রষ্টেট মুত্রথনালীকে ঘিরে থাকে। মুত্রনালী কিডনী থেকে প্রস্রাব বহন করে নিয়ে আসে। প্রষ্টেট ক্যান্সার পুরুষদের মধ্যে অন্যতম একটি সাধারণ ক্যান্সার। প্রোস্টেট ক্যান্সার সময়ের সাথে ধীরে ধীরে অগ্রসর হয়, এজন্য এটি বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই শেষ স্টেজ এ গিয়ে ধরা পড়ে। তবে এটি শরীরের অন্যান্য অংশে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং আক্রমণাত্মক হতে পারে।
প্রোস্টেট ক্যান্সার এর কারণঃ
প্রষ্টেট ক্যান্সারের সঠিক কারণ এখনও জানা যায়নি। তবে প্রষ্টেটে ক্যান্সার কোষগুলি বৃদ্ধি করতে পারে এমন কারণগুলি হলোঃ
বয়সঃ প্রস্টেট ক্যান্সার সাধারনত ৫০ বা তদুর্ধ বয়সী পুরুষদের মধ্যে হয়ে থাকে।
বংশগতঃ যদি কোন ব্যক্তির প্রষ্টেট ক্যান্সারের পারিবারিক ইতিহাস যেমন বাবা, মামা, চাচা ইত্যাদি থাকে, তাহলে তাদের প্রষ্টেট ক্যান্সারের সম্ভাবনা বেশী থাকে।
স্থুলত্বঃ স্থুল বা অতিরিক্ত মেদযুক্ত পুরুষদের প্রস্টেট ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বেশী থাকে।
যৌন সংক্রমণঃ বিভিন্ন ধরনের যৌনরোগ যেমন গণোরিয়া, সিফিলিস ইত্যাদি প্রস্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।
রাসায়নিক এক্সপোজারঃ ক্যাডমিয়ামের মত কার্সিনোজেনিক রাসায়নিকের সংস্পর্শে থাকা পুরুষদের মধ্যে প্রস্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি থাকে।
প্রস্টেট ক্যান্সার এর লক্ষণঃ
প্রাথমিক স্টেজে প্রস্টেট ক্যান্সারের সাধারনত বিশেষ কোন লক্ষণ পরিলক্ষিত হয় না। তবে দীর্ঘসময় ধরে যদি নিম্নোক্ত লক্ষণগুলো দেখা দেয়, তবে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। যেমনঃ
১. ঘন ঘন মুত্রত্যাগ।
২. প্রস্রাবের সাথে রক্ত বা পুঁজ যাওয়া।
৩. বেদনাদায়ক বীর্জপাত।
৪. দিন দিন ওজন কমে যাওয়া।
৫. হাড়ের মধ্যে ব্যথা অনুভব হওয়া।
৬. তলপেটে ব্যথা।
৭. প্রস্রাব করার সময় কামড়ানো ব্যথা।
৮. পা বা শ্রোণী অঞ্চলে ফোলাভাব।
প্রস্টেট ক্যান্সার এর প্রকারভেদঃ
অ্যাসিনার অ্যাডিনোকার্সিনোমাঃ অ্যাডিনোকার্সিনোমা ক্যান্সারগুলি প্রস্টেট গ্রন্থির অভ্যন্তরে উপস্থিত থাকে। প্রস্টেট এর এই ধরণের ক্যান্সার পুরুষদের মধ্যে বেশী হয়ে থাকে।
ডিউটাল অ্যাডিনোকার্সিনোমাঃ এই ধরণের প্রস্টেট ক্যান্সার প্রস্টেট এর আস্তরণ থেকে শুরু হয়ে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে
ট্রানজিশনাল সেল (বা ইউরোথেলিয়াল) ক্যান্সারঃ এই ধরণের প্রস্টেট ক্যান্সার টিউবটির আস্তরণে শুরু হয়, যার মাধ্যমে মুত্র, মুত্রনালীর মাধ্যমে মুত্রাশয় এবং প্রস্টেট অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে।
স্কোয়ামাস সেল ক্যান্সারঃ স্কোয়ামাস সেল ক্যান্সারগুলি প্রস্টেট এ থাকা সমতল কোষ থেকে উৎপন্ন হয়ে টিউমার গঠন করে এবং ক্যান্সার কোষে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হতে থাকে।
ক্ষুদ্র কোষ প্রস্টেট ক্যান্সারঃ নিউরোএন্ডোক্রাইন ক্যান্সারের জন্ম দেয় ক্যান্সার নির্ণয়ঃ
এই ধরনের ক্যান্সার সাধারণত খুব ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায় এবং ব্যক্তিরা কিছু সময়ের জন্য লক্ষণগুলি প্রদর্শন করতে পারে না। যদি প্রোস্টেট বড় হয়, তবে প্রাথমিক নির্ণয় রেকটাল পরীক্ষা বা ট্রান্সরেক্টাল আল্ট্রাসাউন্ড (TRUS) দ্বারা করা যেতে পারে। জন্য একটি রক্ত পরীক্ষাপ্রোস্টেট-নির্দিষ্ট অ্যান্টিজেন (PSA) উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের মধ্যে তাদের প্রাথমিক পর্যায়ে প্রোস্টেট টিউমার সনাক্ত করতে ব্যবহার করা যেতে পারে। যদি এই পরীক্ষাগুলির মধ্যে কোনটি ক্যান্সারের পরামর্শ দেয় তবে নির্ণয় নিশ্চিত করার জন্য একটি বায়োপসি করা হয়। প্রথম দিকে ধরা পড়লে, এই ক্যান্সার নিরাময়যোগ্য। প্রস্টেট ক্যান্সারের একটি বৃহৎ সংখ্যাগরিষ্ঠ নির্ণয় হয় তারা ছড়িয়ে পড়ার আগে বা যখন তারা শুধুমাত্র স্থানীয়ভাবে ছড়িয়ে পড়ে। এই ক্ষেত্রে বেঁচে থাকার হার খুব বেশি।
প্রস্টেট ক্যান্সারের জন্য প্রতিরোধের টিপস
১. ফল এবং সবজি সহ একটি সুষম খাদ্য খান এবং লাল মাংস সীমিত করুন.
২. শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকুন এবং একটি স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখুন.
৩. পরিমিতভাবে অ্যালকোহল পান করুন এবং ধূমপান করলে ধূমপান ত্যাগ করুন.
৪. আপনার ডাক্তারের সাথে প্রোস্টেট ক্যান্সার স্ক্রীনিং নিয়ে আলোচনা করুন.
৫. Movemem এর মাধ্যমে সচেতনতা বাড়ান এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় তথ্য শেয়ার করুন.
প্রস্টেট ক্যান্সারে জটিলতা
১. ঘন ঘন প্রস্রাব বা অসুবিধা
২. মূত্রনালীর অসংযম, মূত্রাশয় নিয়ন্ত্রণ হারান,
৩. হাড়ের ব্যথা
৪. ফ্র্যাকচার
৫. হাড়ের মেটাস্টেস
প্রস্টেট ক্যান্সার এর হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসাঃ
প্রস্টেট ক্যান্সারের ক্ষেত্রে হোমিওপ্যাথি একটি সর্ব-উৎকৃষ্ট চিকিৎসা ব্যবস্থা। ক্যান্সারের স্টেজ, রোগীর বয়স ও শারীরিক অবস্থা ও লক্ষণের উপর ভিত্তি করে Thuja Occidentalis, Conium Mac, Berberis Vulguris, Lycopodium, Phosphorus, Clemetis, Solidago, Terebinthina, Acid Phos, Equisetum Hypo, Acid Nit, Stromonium, Opium সহ আরো ৪৫ টির মতো মেডিসিন ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার সাফল্যের পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে অনেক রোগী হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার উপরে আস্থা রাখছেন। কোন ধরনের অপারেশন ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই হোমিওপ্যাথিতে প্রাথমিক পর্যায়ের রোগীরা পুরোপুরি আরোগ্য লাভ করে থাকে এবং এডভান্সড স্টেজের রোগীরা হায়াত থাকা পর্যন্ত ভালো থাকে।
———————————–
ডাঃ মোঃ শফিকুল আলম
বি এইচ এম এস (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়), পি-এইচ-ডি (ভারত)
সাবেক অধ্যক্ষ,
সহযোগী অধ্যাপক- মেডিসিন বিভাগ
সরকারি হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মিরপুর-১৪, ঢাকা।
————–
চেম্বারের ঠিকানাঃ
আল সাবা হোমিও ফার্মেসী
৭০/বি, পূর্ব পান্থপথ, ঢাকা
সময়ঃ সকাল ১১ টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত,
৬ টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত।
সিরিয়ালের জন্যঃ 01816-566944, 01816-566943
যে কোন তথ্য ও পরামর্শের জন্যঃ 01712-796505, 01749-898929
Sorry, the comment form is closed at this time.